তোমার আমার শরীর বেয়ে বেয়ে
নাকি চলে বিদ্যুতের ছটা-
বিবর্ণ ধূসর মেঘেদের নিজেদের দিনের মতোন,
তবুও আমাদের অঙ্গে অঙ্গে জমে পুরু হতে থাকে
ধুলার আস্তরণ।
ধার কমে,
আমাদের শত কোটি বন্ধুর মাঝে
বাড়ে বিভেদ।
ঝাপসা হয়ে আসে স্মৃতি,
কোন আমলের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন-
আর রঙিন প্যাকেটে মুড়িয়ে যত্নে লুকিয়ে রাখা
কিছু ইচ্ছে-
আবেগ হয় বিবর্ণ, মলিন।
খোলা আকাশ এখন আর আমাদের স্বপ্নেও ধরা দেয়না-
হিসেবের খাতা নিয়ে এনট্রপি কষতে বসি নিজেদের,
কে কখন দৌড়ে পালালাম এখান থেকে-
কতদূর পালালাম।
পালিয়ে কোথায় গেলাম সহস্র দেয়াল ভেঙ্গে,
বাঁধভাঙা মাঠের সীমানা পেরিয়ে-
রুটিনে আটকে রাখা এলার্মের দিন থেকে
ক্যালেন্ডারে দাগানো চেকলিস্টের বোঝা থেকে
নতুন বানানো গদ্যের নেশা থেকে
পুরোনো কবিতার বইয়ের পিছুটান থেকে
কবে কাকে কোথায় দিয়ে রাখা কথার মায়া থেকে
আর তোমার আমার মাঝের
অকারণ জট পাকানো ঝগড়ার দিনগুলো থেকে-
কতদূর গেলাম।
কীভাবে গেলাম।
আর কেনইবা গেলাম?
আমি বেনেফিট অফ ফিয়ারেই বিশ্বাসী।
কেউ কেউ আবার বেশি তড়িৎকর্মা কিনা-
এতদিনের পুরনো জাল ছিঁড়ে
ঘরের এককোণে অবহেলায় পড়ে থাকা
চিরচেনা জুতোটা পায়ের ফাঁকে গলিয়ে ঠিকই
বেরিয়ে পড়ে-
কারফিউয়ের ধার কে ধারে!
শেষ বিকেলের আলো-আধাঁর দেখার নাম করে
নিঃশব্দে ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়ায়।
চেনা জগতের অচেনা যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে একদৃষ্টে
তাকিয়ে দুহাত মেলে,
প্রাণ খুলে দাঁড়ায়।
বোবা চেতনা ওরা, কথা বলতে জানে না।
একে অন্যের দিকে তাকিয়ে কি ভেবে মুচকি হেসে
হঠাৎ পরপর দুটো বিসর্জন-
একটা জীবনানন্দের, একটা বাইবেলের-
নেক্রোপলিসের কালো মাটিতে লাফ দিয়ে ক্ষান্ত হয়
ওরা অবশেষে।
চুইয়ে চুইয়ে পড়া রক্তের কণ্ঠে সেই কতো পুরনো
স্বার্থ আর হিপোক্রেসির বন্যা-
শ্রেণিভেদের ওপর আজন্ম জমিয়ে রাখা
প্রেডিক্টেবল দুটো অপবাদ চাপিয়ে-
তিলে তিলে গড়ে তোলা বিবেকের শ্রাদ্ধ করে
চলে কিছু দুমুখো আহাজারি,
অজানা হতাশা আর ক্ষোভের চাপা কান্না।
সন্ধ্যা নামে,
রাতের আধাঁর ঠেলে ক্লান্ত হয়ে শেষে ওরা ফিরে আসে
বাড়ি- পালানো অতটাও সহজ নয়।
ধুলার আস্তরণ পুরু হয়,
পুরু হয়।
আমাদের হাত পা না থাকতে পারে-
বেঁচে থাকার ভান তো করছি!
প্যান্ডেমিক না এপিডেমিক, এ
ঘোড়াকে কী বলে-
শেষ হলে একদিন আমাদের লেকের ধারে
ঠাণ্ডা বাতাসে হাঁটতে
বেরোতে হবে-
এভাবে বেঁচে থাকা যায় না।
ঘরের ভেতর এই ছোট্ট ঘরে একসাথে বসে
এরকম গাঁজাখুরি কাব্য আর লেখা যায়না।