বাংলাটা ঠোঁটে

[নটরডেম কলেজের ত্রৈমাসিক পত্রিকা ঢাক-ঢোল, জানুয়ারি-মার্চ ২০১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত]

ফেব্রুয়ারিই আমাকে একুশের
কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
কবে পড়েছিলাম কোন এক পাঠ্যবইয়ে,
ভালই লাগে, গর্বিত লাগে
নিজেকে-
বীরের দেশে জন্মেছি, বীরের জাতি আমরা!
মনে তো থাকে না বছরভর, দুদিন
গেলেই ভুলে যাই।
ভাষা আন্দোলন খুব ভারী শব্দ বটে!

বইমেলাই আমাকে একুশের কথা জানান দিয়ে যায়,
বন্ধুদের নিয়ে ঘোরাঘুরি,
আড্ডার ফাঁকে চোখ পড়ে শহীদ স্মৃতি ফলকে,
থমকে যাই; বীরগাঁথা পড়ি-
এত সাহস, এত হিম্মত বুকে!
বাংলা শেখা আমার দ্বারা হবেনা-
গর্বিত সান্ত্বনায় প্রশান্তি ফোটে ললাটে।

চারদিকে যেন একটু বেশিই বাংলাপ্রীতি!
ও, ভাষার মাস যে এসে গেছে,
বাংলাটা তো বলতেই পারি,
দুচারটে ইংরেজি, হিন্দি না বললে কি চলে?
সবাই ক্ষ্যাত ভাববে, না না!
একটু বিকৃত বাংলা আবার ভাষার আধুনিকায়নও বটে!

অসুস্থ মডার্ন বাঙালি আমি,
একুশ তো যাচ্ছে, যাবে, আসবে।
শহীদদের ফুল দিচ্ছি, দিব!
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো গাইছি, গাব!
এটাই কি যথেষ্ট নয়?
শহীদদের ইতিহাস জানা কি খুব জরুরি?
খাঁটি কাঠখোট্টা শুদ্ধ বাংলা
বলা কি খুব জরুরি?
আরে না,
আমার হৃদয়ে বাংলার স্থান নেই।
বাংলাটা শুধু ঠোঁটে।