তোমাদেরি গান শোনাবো

ভূতটা মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলো ওপারের এক ভদ্রলোক। বাসায় ক্যাসেটে বাজতো, আমিও হা করে দিনরাত গিলতাম শ্রীকান্তের কণ্ঠের মন ভোলানো ঠাকুর-সঙ্গীত। দিন যায়, আচার্য বাবুর জায়গা দখল করে নেয় মাইকেল জ্যাকসন-আসিফ আকবরেরা। জীবনের ‘জ’ও তখনো বুঝতে শিখিনি, অথচ বন জোভির সেই ইটস মাই লাইফ শুনে আত্মা লাফিয়ে লাফিয়ে উঠত, আরো পোক্ত হয়ে বসত ভূত।

বেড়ে ওঠা এগুলোর মাঝেই। ডিজুসের বিজ্ঞাপন দেখে যেমন সাড়া দিতে চেয়েছি, ব্যাচেলর দেখতে শুনতে কখন কোন গোল্লায় চলে গেছি, ইয়ত্তা নেই। ইত্যাদিতে শুনে শুনে এন্ড্রু সাহেবের ফ্যান বনে যাওয়া, এদিকে আতিফ আসলামের গলা শুনে মনে হত- নাহ, এ তো আমারই সুর, আমারই কথা। বয়স বাড়ে, বায়োস্কোপের নেশাও ছাড়ে না- মাথা থেকে ভূতও নামে না। পশ্চিমের সাথে ভালোমত ‘লিংকিং’ অনেক পরে- পাতলা গড়ন, চুল ছোটো মতন এক লোক আর তার দলের বাজনা শুনে মনে হতো, আরে, এ বেটারা তো হেবি গায়! তারপর হুট করে বড় হয়ে যাওয়া- হতে হতে আপন করে নেওয়া বাচ্চু, জেমস, লিংকন, সুমন, তুহিনদের সৃষ্টিগুলোকে। চলছে এখনো, চলবেই, ভালবাসাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশে-বিদেশে সবখানে।

ছবি আর কথাগুলোর মাঝে মিল খুবই সামান্য, আবার অঢেলও। একটা দীর্ঘ রোলার কোস্টার রাইডের মত অভিজ্ঞতাগুলো, টুকরো টুকরো, কিছুটা আবছা, কিন্তু একসাথে জড়ো করলে বিশাল কিছু। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা হয়নি এ লাইনে, শেষমেষ বুড়ো গাধা স্টেজে এসে মাথার ভেতর থাকা ভূতটাকে সামান্য রিলিফ দেওয়ার একটা অপচেষ্টা। বাথরুম সিঙ্গারের কর্ড থেকে বেরোয় তো না আহামরি কিছু, তবে তৃপ্তিটা অতুলনীয়। বাউলের বাণী অকাট্য- গাড়ি তো সাধারণত চলে না, তবে দেখা যাক, কদ্দুর গিয়ে থামে!