কেকে

অবশেষে ক্লাস-ল্যাব-অফলাইন-সাবমিশন থেকে মুক্ত হয়ে কিছু লেখার ফুরসত পাইলাম।

আমার লাইফের এক্সপেরিয়েন্সে কেকে-ই সম্ভবত একমাত্র গায়ক, প্রথমত- যার গান খুব ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত শোনা হইছে, এবং দ্বিতীয়ত যেই বয়সে শোনা হইছে- তখন কোন গানের সিঙ্গার কে- কোন মুভিতে কে প্লেব্যাক দিচ্ছে, এসব চিন্তা করার মত পরিপক্বতা কিংবা দরকার কোনোটাই ছিল না। তাই জানাও হইতো না গানটা আসলে কার। ভাল লাগত তাই শোনা হইতো বাটন ফোনে ইন্টারনেট প্যাক কিনে, ভাল লাগত তাই দেখা হইতো নাইনএক্সএম-বিফোরইউ-এমটিভিতে। আমার বিশ্বাস- একই এক্সপেরিয়েন্স সমবয়সী আরো অনেকের। ‘তু হি মেরি শাব হ্যায়’ সম্ভবত প্রথম গানটা হবে। এরপর তো আরো কত কী আসলো। একটা পর্যায়ে মাথায় একটা ম্যাপিং হয়ে গেছিল যে- ইমরান হাশমির লিপসিং গান মানেই এইটা একটা পার্টিকুলার গায়ক গাইতেসে xD আস্তে আস্তে জ্ঞান-বুদ্ধি-রুচির ডেভেলপমেন্টের সাথে সাথে অনেক কিছুই চেখে দেখা হইছে, পুরনো অনেক জনরার গানই পছন্দের তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেছে- সবকিছু হয়তো আর আগের মত সমানভাবে টানে না, কিন্তু সেই মারপ্যাঁচ-ভাবনাচিন্তাহীন বয়সের মনোজগতের নিত্যসঙ্গী যেসব মায়াভরা গান আর গায়কী, সেগুলার ক্রেডিট অবশ্যই প্রাপ্য গায়কের। এই কানেকশনটাই কেকে একটা জেনারেশনের মধ্যে করে দিয়ে গেলেন- এটাই একটা বিরাট কিছু আমার মতে- তা যে যত যাই নিজেদের হনু মনে করুক না কেন কিংবা বাংলা আবেগ দেখাতে আসুক না কেন।

আজ যখন পুরনো কোনো প্রিয় গানের কথা মনে পড়ে বা শোনা হয় ইউটিউবে সাজেশনে বা ফেসবুকের ভিডিওর কল্যাণে- তখন আমি বারবার অবাক হয়ে খেয়াল করি- আরে, এইটার সিঙ্গারও সে! কী অদ্ভুত! একটা দুইটা এমন না, একটার পর একটা। অরিজিৎ সিং এর টাইমলাইন থেকে শুরু করে পরের সময়টার বিখ্যাত গায়কী আমার চোথায় কমন পড়ে যায় মোটামুটি, কিন্তু একদম উঠতি কৈশোরের টাইমলাইনটা যেহেতু সেই লেখাপড়াটুকুর ধার ধারতো না- তাই আগের চেয়েও বেশি শ্রদ্ধা চলে আসে এই পুনরাবিষ্কারের বদৌলতে।

ইউ উইল বি মিসড, লেজেন্ড। যেমনটা গতদিন লেখসিলাম- আপনার রেখে যাওয়া আর্টগুলা সত্যিকার অর্থেই আধুনিক বলিউডের বা হিন্দি গানের ডেফিনিশন পর্যায়ের ছিল, আছে, থাকবে। অন্তত আমার কাছে। আরো অনেকের কাছে।

১ জুন ২০২২